Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
ঢেলে সাজানো হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ
বিস্তারিত

স্থানীয় সরকারের অন্যতম স্তর ইউনিয়ন পরিষদকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিষদের কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে দূর করা হচ্ছে জনবল সংকট। এরই মধ্যে সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা সরকারি খাত থেকে বেতন-ভাতা পাবেন। পরিষদের সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হবে তিন হাজার ব্যক্তিকে। এরই মধ্যে বেশ কিছু জেলা পরিষদ সচিব নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সম্মানী বাড়ানোরও চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এ ছাড়া যেসব ইউনিয়নে কমপ্লেক্স ভবন নেই, সেখানে পর্যায়ক্রমে আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হবে। এ-সংক্রান্ত একটি প্রকল্পও রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে গ্রাম পুলিশের সুযোগ-সুবিধা ও কর্মপরিধিও

বাড়ানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্র জানিয়েছে।

 

 


এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক সমকালকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জনগণের সেবা পুরোপুরি নিশ্চিত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পরিষদের জনবল সংকটসহ যেসব সমস্যা রয়েছে, তা অচিরেই দূর করা হবে। এ ছাড়া পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্রকে আরও গতিশীল করার ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। নাগরিকরা পরিষদে এসে প্রাথমিক সেবা নির্বিঘ্নে পাবেন, সেটি নিশ্চিত করা হবে বলে জানান তিনি।

বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা বিতরণসহ টিআর, কাবিখা, এডিপি, ভিজিডি, ভিজিএফের মতো বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। পাশাপাশি অনলাইনে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যক্রমসহ বিভিন্ন রকমের সনদ প্রদান, গ্রাম আদালতের কার্যক্রমও ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু স্থায়ী জনবল না থাকায় এসব কর্মকা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কার্যক্রম বেগবান করতে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ প্রণয়ন করে। ইউনিয়ন পরিষদে হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের একটি পদ সৃষ্টির সুযোগ রাখা হয়েছিল। তৃণমূলে ডিজিটাল সেবা পেঁৗছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার অনুযায়ী দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদে কম্পিউটার অপারেটর পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদে হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এখন সরকারি খাত থেকে বেতন-ভাতা পাবেন। এ জন্য এসব পদকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা হয়েছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে এরই মধ্যে এসব পদে যারা নিয়োগ লাভ করেছেন, তাদের চাকরির অনিশ্চয়তা দূর হলো। এত দিন এরা প্রতিষ্ঠানের আয়ের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। তাদের চাকরিও ছিল অস্থায়ী। চেয়ারম্যান ইচ্ছা করলেই যাকে খুশি নিয়োগ দিতেন, আবার বাদও দিতে পারতেন। এখন এ ক্ষমতা শুধু সরকারের হাতে থাকবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের এ প্রস্তাব এরই মধ্যে অর্থ বিভাগ অনুমোদন করেছে। প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটিও তা অনুমোদন করেছে। এখন স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে এটি কার্যকর করা বাকি রয়েছে। প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সব পদকে পর্যায়ক্রমে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা হবে। চার হাজার ৫৫৩টি পদের মধ্যে প্রথম বছরে এক হাজার, দ্বিতীয় বছরে এক হাজার, তৃতীয় বছরে এক হাজার ২০০ ও চতুর্থ বছরে এক হাজার ৩৫৩টি পদ রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা হবে।

ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব আয় চার লাখ টাকা হলেই সে ইউনিয়ন পরিষদে হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ দেওয়া যাবে বলে অর্থ বিভাগ যে শর্ত আরোপ করেছিল, তা প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটি নাকচ করে দিয়েছে। এ ছাড়া সব পরিষদে তিন হাজার সচিব নিয়োগ দেওয়া হবে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে সচিব পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। এর পর থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে মাদারীপুর, শরীয়তপুর, নাটোর, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় বেশ কিছু নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসন থেকে চাওয়া তালিকা অনুযায়ী এখনও বাকি আছে তিন হাজার ১৩০টি পদ। এই পদগুলো পূরণের জন্য শিগগিরই পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। তবে এবার জেলা অনুযায়ী ভাগ না করে বিভাগ অনুযায়ী নিয়োগ আসছে। উলি্লখিত পদের ভেতরে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ দেওয়া হবে চট্টগ্রামে ৫৮৪টি পদে, রাজশাহীতে ৫২১টি, খুলনায় ৪৯০টি ও বরিশাল বিভাগে ৫০৩টি পদে। সবচেয়ে কম পদ আছে সিলেট বিভাগের জন্য। এসব পদে যে কোনো বিষয়ে স্নাতক পাস প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। বেতন হবে জাতীয় স্কেলের নয় হাজার ৩০০ থেকে ২৬ হাজার ৫৯০ টাকা গ্রেডে।

ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের সম্মানী দ্বিগুণ করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। বর্তমানে একজন চেয়ারম্যান মাসিক সম্মানী পান তিন হাজার টাকা। এর মধ্যে এক হাজার ৪৭৫ টাকা পান সরকারি খাত থেকে আর বাকি টাকা পান পরিষদ থেকে। মেম্বাররা মাসিক সম্মানী পান এক হাজার ৪০০ টাকা। এর মধ্যে সরকার থেকে পান ৯০০ টাকা আর বাকিটা পরিষদ থেকে দেওয়া হয়।

 

উৎস: দৈনিক সমকাল. ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ইং

ডাউনলোড
ছবি
প্রকাশের তারিখ
02/12/2019
আর্কাইভ তারিখ
03/12/2019